ad
চালবাজিতে চাল, মানুষের অবস্থা বেহাল
চালের বাজারের যে অস্থিরতা আমরা লক্ষ্য করছি, তা শুধু হতাশার নয়, বরং মানুষের জীবনের সার্বিক অবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে [...]
সম্পাদকীয় / যাত্রা শুভ হোক
দেশের আপামর জনতার স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে তারুণ্যে পূর্ণ নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ ঘটল। গত শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে দলটির। অনুষ্ঠানে দলটির শীর্ষ পদগুলোয় মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। বস্তুত জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররাই রয়েছেন দলটির নেতৃত্বে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলটির শীর্ষনেতারা বিভাজনের রাজনীতির পরিবর্তে যে ঐক্যের রাজনীতিসহ দেশ ও জনতা নিয়ে বেশ কিছু অঙ্গীকারের ঘোষণা করেছেন, তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতারা দুর্বল রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন। ঘোষণাপত্রে ব্যক্ত করা হয়েছে নতুন ‘রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ মাধ্যমে গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতের প্রত্যয়। এ ছাড়া দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘জুলাই স্পিরিট’ সামনে রেখে আগামী প্রজন্মকে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ উপহার দেওয়াই তাদের লক্ষ্য। অধিকার ও মর্যাদাভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি হত্যা, গুম-খুনের রাজনীতি বন্ধ করতে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও জানানো হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং জাতির প্রতি তাদের এ অঙ্গীকারকে আমরা স্বাগত জানাই। কেননা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশের স্বপ্ন এ দেশের সব মানুষের। ফলে দলটি প্রকৃতই এ অঙ্গীকার সামনে রেখে তাদের পথচলা অব্যাহত রাখতে পারে, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতিসহ সামগ্রিকভাগে এর ইতিবাচক প্রতিফলন একদিন দেখা যাবে—এটাই সবার বিশ্বাস। দেশের সামগ্রিক বাস্তবতায় নতুন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে এনসিপির যাত্রায় রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ। সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্টজন বলছেন, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয়তায় এনসিপির আবির্ভাব সময়োপযোগী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা একদল উদ্যমী তরুণ-তরুণীর নেতৃত্বে গঠিত এনসিপির কাছে সবার প্রত্যাশা অনেক। গ্রহণযোগ্য কর্মসূচির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা বাড়াবে দলটি। নতুন দলের কাছে সবাই প্রত্যাশা করছে নতুন রাজনীতিই । বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অতীতে অনেক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে। তার কোনোটি জনপ্রিয়তা অর্জন করে টিকে আছে, অধিকাংশই কোনোরকম রাজনীতি ধরে রেখেছে। সুতরাং শুধু অতীত নয়, বর্তমানের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও যেসব দুর্বলতা ও সংকীর্ণতা বিদ্যমান, তা জয় করতে হবে নতুন দলটির। কেননা দেশের জনগণের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ, তারা এসবের অবসান চান। স্বভাবতই নতুন দল হিসেবে এসবই তাদের চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবিলা বা জয় করেই ছুটতে হবে লক্ষ্যের দিকে—নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে। সন্দেহ নেই যে, তার জন্য দরকার সময়ের। অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক হচ্ছে, মেধাবী তরুণ প্রজন্মের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিমুখতা বলে যে একটি অভিযোগ চাউর ছিল, আপাতদৃষ্টে সে জায়গাটা পূরণ হতে যাচ্ছে নতুন দলটির আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক হচ্ছে রাজনৈতিক ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চর্চার রাজনীতি। যেহেতু রাজনীতিকরাই দেশ পরিচালনা করেন, রাজনীতিই দেশের সব নীতিনির্ধারণ করে থাকে, সেহেতু রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা সুসংহত হতে হবে সবার আগে। তারপর এর প্রতিফলন ঘটবে সব জায়গায়। নতুন দল এনসিপি রাজনীতিতে সেই সহনশীলতা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও গণতান্ত্রিক চর্চায় পথ দেখাবে, পরিচ্ছন্ন রাজনীতির সংস্কৃতি আনতে ভূমিকা রাখবে—এমনটাই প্রত্যাশা। জাতীয় নাগরিক পার্টির যাত্রা শুভ হোক।
চালবাজিতে চাল, মানুষের অবস্থা বেহাল
চালের বাজারের যে অস্থিরতা আমরা লক্ষ্য করছি, তা শুধু হতাশার নয়, বরং মানুষের জীবনের সার্বিক অবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে [...]
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধ করুন
ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী—এক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহর। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ শহরটি আজ বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানকার বায়ুদূষণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে, যা শহরের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। গত শনিবারও শহরটির বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় ছিল। এদিন বিশ্বের ১২৪টি শহরের মধ্যে সকাল ১০টার দিকে বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, ১৭৪ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। এ দূষণের পেছনে অনেক কারণ জড়িত। ঢাকা শহরের রাস্তায় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে, যাদের বেশিরভাগই পুরোনো ও নিম্নমানের। জ্বালানি ব্যবহারে এ যানবাহনগুলো থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে। একটা বাসের ‘ইকোনমিক লাইফ’ সাধারণত ১০-১৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। উন্নত দেশগুলোতে বাসের ইকোনমিক লাইফ শেষ হওয়ার পর সেগুলোকে সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ কোনো যানবাহনের ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে গেলে সেগুলো ঠিকভাবে জ্বালানি পোড়াতে পারে না এবং তখন সেগুলোর ধোঁয়ার সঙ্গে ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হয়। কিন্তু বাংলাদেশে যানবাহনের ইকোনমিক লাইফ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও অবাধে চলাচল করতে পারে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং ট্রাফিক পুলিশদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে। দূষণবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপসের ‘দেশব্যাপী ৬৪ জেলার বায়ুদূষণ সমীক্ষা-২০২১’ অনুযায়ী, ঢাকার আশপাশের প্রায় ১ হাজার ২০০টি ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্পকারখানা আছে, যেগুলো দূষণের অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ইটভাটা এখনো সনাতন পদ্ধতিতে চলছে। এসব ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা, কাঠ ব্যবহার করা হয়। ফলে এটা থেকে প্রচুর ছাই তৈরি হয় এবং কার্বন মনোঅক্সাইড, সালফার অক্সাইড ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো দূষিত কণা বাতাসের সঙ্গে মেশে। শহরের আশপাশে অবস্থিত শিল্পকারখানাগুলো থেকে নির্গত ধোঁয়া ও রাসায়নিক পদার্থ বায়ুকে দূষিত করে। রাজধানীতে সারা বছরই ছোট-বড় অজস্র ভবন নির্মাণ ও রাস্তা মেরামতের কাজ চলে। এর পাশাপাশি গত কয়েক বছরে যোগ হয়েছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন বড় প্রকল্প। যে কোনো ধরনের নির্মাণকাজ করার সময় বায়ুদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে সেসব নিয়ম পালনের তোয়াক্কা করতে দেখা যায় না। চলমান নির্মাণকাজ থেকে প্রচুর ধুলোবালি বাতাসে মেশে, যা বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য জমে থাকে, যা পচে গিয়ে বায়ুকে দূষিত করে। বর্জ্য পোড়ানো বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। বায়ুদূষণের প্রভাব জনজীবনের ওপর অত্যন্ত ভয়াবহ। বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগ দেখা দিচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, যা জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বায়ুদূষণের কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বায়ুদূষণ রোধে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। পুরোনো ও নিম্নমানের যানবাহন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে। শিল্পকারখানাগুলো থেকে নির্গত ধোঁয়া ও রাসায়নিক পদার্থ নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। শিল্পকারখানার বর্জ্য পদার্থ নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে, যাতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করতে না পারে। নির্মাণকাজ থেকে নির্গত ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানোর মতো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ইটভাটাগুলো থেকে নির্গত ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে এবং ইটভাটার ধোঁয়া যতটুকু সম্ভব ওপরের দিকে ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে যাতে ময়লা আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে। প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যেতে পারে। বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে, যাতে বায়ুদূষণ রোধ করা যায়। ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ একটি জটিল সমস্যা, যার সমাধান সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব। সরকারের পক্ষে কখনোই এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না যদি না জনগণ সচেতন হয়। পাশাপাশি বায়ুদূষণ রোধে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চলুন, আজ থেকেই আমরা শপথ নিই—বায়ুদূষণ রোধ করি, একে অন্যের জীবন রক্ষা করি। শহিদুজ্জামান শাকিল, শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
সেই দিনটি / গ্রাহাম বেল
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক। তিনি ১৮৪৭ সালের ৩ মার্চ এডিনবরা, স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। টেলিফোনের অন্যতম আবিষ্কারক হিসেবে তিনি সবচেয়ে পরিচিত। তাকে বোবাদের বাবা তথা দ্য ফাদার অব দ্য ডিফ নামে ডাকা হতো। তার বাবা, দাদা ও ভাই—সবাই একক অভিনয় ও বক্তৃতার কাজে জড়িত ছিলেন এবং তার মা ও স্ত্রী উভয়ই ছিলেন বোবা। এ কারণেই বোবাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অনেক গবেষণা করেছেন। টেলিফোন উদ্ভাবনের আগে থেকেই শ্রবণ ও কথনসংশ্লিষ্ট গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৮৭৬ সালে তাকেই টেলিফোনের প্রথম মার্কিন পেটেন্টের সম্মানে ভূষিত করা হয়। পরবর্তী জীবনে বেল আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেন, যার মধ্যে রয়েছে উড়ো নৌকা ও বিমানচালনবিদ্যা। ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বেল। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন যে টেলিফোন, সেটিকেই তিনি এক উটকো ঝামেলা জ্ঞান করতেন। এজন্যই নিজের গবেষণা ও অধ্যয়ন কক্ষে কোনো টেলিফোন রাখতেন না। বেল মারা যাওয়ার পর আমেরিকার সব টেলিফোনে এক মিনিটের জন্য অবিরাম রিং বাজানো হয়। মার্কিন প্রশাসনের ভাষ্যমতে, যে মহান ব্যক্তি মানুষে মানুষে যোগাযোগের এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, তাকে উপযুক্ত সম্মান দেখানোর জন্যই এমনটি করা হয়েছে। ১৯২২ সালের ২ আগস্ট তিনি মারা যান।
বিশ্ব পানি দিবস, কেন পালন হয় জানেন তো?
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্যমতে, বিশ্বের প্রায় ৭৭ কোটির বেশি মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। [...]
রামুতে ২০ দিনে সাগরে ছাড়া হলো দেড় হাজার কাছিম ছানা
কক্সবাজারের রামুর প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতের বেলাভূমি দিয়ে ২০ দিনে দেড় হাজার কাছিমের ছানা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। [....]
লেখক সার্চ
অনুসন্ধান